Submit a Blog
Member - { Blog Details }

hero image

blog address: http://www.banglapress.com.bd/

keywords: newspaper, daily newspaper

member since: Jan 10, 2016 | Viewed: 97

অজ্ঞতা সবচেয়ে বড় পাপ

Category: Other

বাঁচার মত বাঁচতে চাওয়া মানুষের একটা সহজাত প্রবৃত্তি। দুনিয়ার সব মানুষই বাঁচতে চায় এবং ভালভাবে বাঁচতে চায়। ফুটপাতে গাছতলায় পরের বাড়ির বারান্দায় পড়ে থাকা যে জীবন সেটা কারো কাম্য নয়। এ ব্যাপারে সাদা কালো, শ্যামলা কোন মানুষের মধ্যে কোন প্রভেদ নেই। জন্মের পর থেকে মানুষের যা কিছু চেষ্টা; যা কিছু কর্ম প্রয়াস; আশা আকাঙ্ক্ষা সবই ভালভাবে সুন্দরভাবে বাঁচার। এদিক হতে আমিও ব্যতিক্রম নই। আমিও ভালভাবে বাঁচতে চাই। এই চাওয়া এই মনের আকুতি সাম্প্রতিককালীন কোন চেতনার বহি:প্রকাশ নয়। বহি:বিশ্বের জীবন সম্পর্কে যখন আমাদের জ্ঞান বা ধারণা ছিলনা, যখন গ্রামই ছিল দেশ, অন্য কথায় কূপমণ্ডূকতায় আচ্ছন্ন ছিল আমাদের জীবন এবং চিন্তা চেতনা ধ্যান ধারণা তখনো মানুষ বাঁচতে চেয়েছে। অন্যের করুণা গ্রহণ করাকে আমি আমার জ্ঞান হওয়ার পর থেকে মনে করেছি ভিক্ষা গ্রহণ করার মত মর্যাদা হানিকর। দিনে দিনে আমার অবস্থার পরিবর্তন ঘটেছে, চেনা ও জানার পরিধি হয়েছে ব্যাপ্ত, সাথে সাথে আমার জীবন বোধেরও ঘটেছে বিবর্তন। আমার এই বিবর্তিত জীবনবোধ হয়ত আমার আজকের চাওয়ার নূতন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। হয়ত আজকের আমার অবস্থা আগের চাইতে অনেকখানি স্বতন্ত্র। কিন্তু পরস্পর যোগসূত্র হীন নয়। আজকের মানুষও সেদিনের মানুষের মতই ভালভাবে বাঁচতে চায়। এই চাওয়ার প্রবণতা হতেই অজানা আকাশ পথে জলপথে সে পাড়ি জমায়; বিরূপতা জয় করতে উন্মুখ হয়, স্বাধীনতা সংগ্রাম করে। আমার পরম শ্রদ্ধেয় বাবা শিল্পী মরহুম মকবুল আলী যখন রংপুর জিলা স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র, তখন ১৯৪৬ সালে স্বাধীনতা সংগ্রামে লিপ্ত হয়ে ভালভাবে বেঁচে থাকার জন্যই টিনের চোঙ্গায় শ্লোগান দিয়েছিল লড়কে লেঙে পাকিস্তান, আর ঐ প্রেরণাই তাকে জাগিয়েছিল দুর্জয় সাহস ও শক্তি। পরবর্তীকালে আবার এসেছে স্বাধিকার আদায়ের সংগ্রাম ১৯৭১ সাল এবং সেই ১৯৭১ সালের ২৩ মার্চের বুদ্ধিজীবীদের মিছিলের অগ্রভাগে গলায় হারমনিয়াম ঝুলিয়ে আমার ভাইবোনদের সাথে নিয়ে স্বাধিকার আদায়ের সংগ্রামে লিপ্ত হয়েছিল, ভালভাবে বেঁচে থাকার জন্যই। জনসাধারণকে সচেতন করার জন্য আমার বাবা কত গণসংগীতের আসর করেছে রংপুর জেলার প্রতিটি থানায়। স্বাধীনতার পর বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। কোন সরকারই প্রকৃতপক্ষে কোনদিন কোন দেশবাসীর অমঙ্গল চিন্তা করেননি। প্রত্যেক সরকারই চেয়েছিল বা চাইছে আপন ইচ্ছা ও সাধ্যমত আমাদের দেশবাসীর কল্যাণ করতে। এদেশের বিভিন্ন প্লান প্রোগ্রামের মূলেও আছে একই প্রেরণা। তবুও আজ পর্যন্ত সূর্যালোকের মত দেদীপ্যমান তা হলো ক্ষুধা দরিদ্র। মানুষ তাঁর ন্যায় সঙ্গত পাওনা বা অধিকার এদেশের বৃহদাংশটার জীবনে এক বিরাট সমস্যা। এই বৃহৎ জনগোষ্ঠী এই মুহূর্তে বিরাট বাড়ি, দামী গাড়ি, শান সওকাত কিছুই প্রত্যাশা করে না। শুধু দুটি অন্ন আর তাদের কষ্ট ক্লিষ্ট প্রাণকে বাঁচিয়ে রাখতে চায়। কিন্তু অপ্রিয় হলেও অনস্বীকার্য যে, আজও এদেশের মানুষের এই চাওয়া ঠিকানা খুঁজে পায়নি। যে পাওয়ার জন্য স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং এতসব উদ্যোগ আয়োজন, ধার-দেনা, সাহায্য, দেশ-বিদেশে ছুটাছুটি। তারপরও কেন আমাদের এই অবস্থা-প্রশ্নটা এখানেই।



{ More Related Blogs }